এফএনএস: নিজেদের প্রয়োজনীয় ওষুধের ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশ নিজেরাই উৎপাদন করে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম শফিউজ্জামান। আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ১৩তম এশিয়ান ওষুধ মেলা বিষয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। গতকাল শনিবার তিনদিন ব্যাপী এ মেলা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়। আইসিসিবিতে উপচে পড়া ভিড় ছিল দর্শনার্থীদের। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি, জিপিই এক্সপো প্রাইভেট লিমিটেড ও এলিয়েন্ট ফার্মার আয়োজনে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এফবিসিসিআই ও ইইপিসি ইন্ডিয়া এ মেলার পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ও হাডসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শফিউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ শুধু নিজেদের ওষুধ নিজেরাই উৎপাদন করে না বরং বিশ্বের শতাধিক দেশে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ রপ্তানি করে। গজারিয়া সরকার ২০০ একর জায়গা দিয়েছে ওষুধ শিল্প নগরী তৈরির জন্যে, সেটা যদি বাস্তবায়িত হয় বাংলাদেশের ওষুধ খাত আরও এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড ও নরওয়েসহ ২২টি দেশের ৩৬৫টি কোম্পানি এতে অংশ নিয়েছে বলে জানান মেলার সহ-আয়োজক জিপিই এক্সপো প্রাইভেট লি. এর সিইও পরেশ ঝুরমারভালা। তিনি বলেন, নতুন প্রযুক্তির ধারণা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আইসিসিবি প্রাঙ্গণে মেলা দেখতে আসা দর্শনার্থী ও ফার্মেসিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী কবির হোসেন বলেন, মেলায় এসে নতুন প্রযুক্তি সম্বন্ধে ধারণা তৈরি হয়। এজন্য মেলা দেখতে এসেছি। গ্লোবাল ক্যাপসুল লিমিটেডের ম্যানেজার অব অপারেশন শামসুল আলম বলেন, আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় কোম্পানি। আমাদের সম্পর্কে সবার ধারণা দেওয়ার জন্য এর মাধ্যমে ব্যবসা প্রসারের জন্যে এ মেলায় অংশ নিচ্ছি। কোভিডের কারণে দুই বছর পরে এ মেলা হচ্ছে কিন্তু বিদেশি উদ্যোক্তারা এবার আগের মতো প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে জানান শামসুল আলম। বাংলাদেশে ওষুধশিল্প সমিতি জানিয়েছে, এর মধ্যে ২১৪টি কোম্পানি এখন চালু আছে। ২০১২ সালে ওষুধের বাজার ছিল ৯ হাজার কোটি টাকার। ২০১৯ সালে তা বেড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকাতে দাঁড়ায়। দেশের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি ওষুধ এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানি আয়ের তৃতীয় বৃহত্তম খাত এখন ওষুধশিল্প। ২০১৪ সালে ওষুধ রপ্তানি করে বাংলাদেশের আয় ছিল ৬৯ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ছয় বছর পর আয় বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়। ২০২০ সালে ওষুধ রপ্তানি করে আয় ছিল ১৩৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধের ৮০ শতাংশ জেনেরিক এবং ২০ শতাংশ পেটেন্টেড।