এফএনএস: খুলনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৮ শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুলনা সদর থানার এসআই বিশ্বজিৎ কুমার বোস বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। গতকাল শুক্রবার খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পুলিশের করা ওই মামলায় বিএনপি নেতা শফিকুর আলম তুহিনকে প্রধান আসামি করে এজাহারে ৯২ জনের নাম উলেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৭/৮ শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে খুলনা থানাধীন ৬ নং কে ডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি চলছিল। ওই সমাবেশে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি। অপরদিকে বিকেল ৪টার দিকে ছাত্রলীগ খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এই মিছিলেও আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে ছাত্রলীগ খুলনা জেলা শাখার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডাক বাংলো মোড় থেকে দলীয় কার্যালয়ের দিকে আসার সময় পিকচার প্যালেস মোড় ক্রস করে। এসময় খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইটপাটকেলসহ খুলনা জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। বিএনপির নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের কাজে বাধা প্রদানসহ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে খুলনা থানাধীন পিকচার প্যালেস মোড় হতে বিএনপি অফিস পর্যন্ত এলাকা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এ সময় টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ জানায়, বিএনপির নেতাকর্মীদের ছোঁড়া ইটপাটকেলের আঘাতে ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল হতে পুলিশ আমলযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ মোট ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে রাতে এ ঘটনায় খুলনা সদর থানায় একটি মামলা হয়। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, খুলনায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এতে তাদের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং দলীয় কার্যালয় এলাকা থেকে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, যুগ্ম আহŸায়ক সৈয়দা রেহানা ঈসা, নগর মহিলা দলের সভাপতি আজিজা খানম এলিজাসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।