সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ অপরাহ্ন

ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রেখে টাকার মান বাড়ানোর দাবি

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ জুন, ২০২২

এফএনএস: এক্সচেঞ্জ রেট (বিনিময় হার) স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি টাকার মান বাড়াতে হবে বলে মনে করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, যেমন রাশিয়া নানা উদ্যোগ নিয়ে রুবলকে (রাশিয়ার মুদ্রা) আকর্ষণীয় করেছে। আমাদেরও এটা করতে হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনে আসন্ন বাজেটে ‘ক্ষুদ্র অর্থনীতি: প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দর্ঘদিন ধরে ডলারের রেট ৮২, ৮৩, ৮৪ এর মধ্যে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এটা কেন হলো (টাকার বিপরীতে মূল্যবৃদ্ধি), এর একটা কারণ আছে। কোভিডের সময় কোনো সমস্যা হয়নি। এখন হঠাৎ করেই এটা সমস্যা হয়েছে। এই সমস্যা নিরসন করে এক্সচেঞ্জ রেট ঠিক রাখতে হবে। আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে জিপিডির ১৪ শতাংশ বাজেট। এর একটা বড় ব্যয় চলে যায় বেতন-ভাতা দিতে। বাকি টাকা সরকারি উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা হয়। বাজেট জিডিপির ২০ শতাংশ করলে ভালো। আমাদের মনে রাখতে হবে জিডিপি কিন্তু সরকারের না, এটা জনগণের। প্রকল্প নেওয়া প্রসঙ্গে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রকল্প ভেবেচিন্তে নিতে হবে, যাতে করে রিটার্ন ভালো আসে। আমরা জানি এবার রেলখাতে এক লাখ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এই টাকা কবে রিটার্ন পাবো আমরা জানি না। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. বিনায়ক সেন বলেন, আমরা কেন শ্রীলঙ্কা হবো? আমাদের অর্থনীতির যে চারটি ড্রাইভার (চালিকা শক্তি) আছে তা ঠিক আছে। আমাদের কৃষি খাতে ভালো আছে। এ ছাড়া রপ্তানি আয় ভালো। চলতি বছরের মার্চ পযর্ন্তর রপ্তানি আয় ছিল ৪৪ শতাংশ। এ ছাড়া নন- এক্সপোর্ট ম্যানুফ্যাকচারিংও ভালো। বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে। তবে রেমিট্যান্স কিছুটা কমেছে। চারটা চালিকা শক্তির মধ্যে তিনটাই ভালো। তিনি বলেন, বর্তমানে আমি কোনো চাপ দেখছি না। তবে হঠাৎ করে আমদানি ৬০ শতাংশ হয়েছিল। এটার কারণ আছে, দীর্ঘদিন কোভিড ছিল। কোভিডের পর মানুষ কেনাকাটা করেছে। এ ছাড়া অনেক শিল্প কারখানায় কাঁচামাল প্রয়োজন হয়। তবে বর্তমানে ৬০ শতাংশ থেকে আমদানি কমে ২৮ শতাংশ হচ্ছে। দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ড. বিনায়ক সেন বলেন, আমি সকালে হাঁটাহাঁটি করি। এ সময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের প্রায় জিজ্ঞাসা করি তাদের আয় কতো। কেউ এখনো বলেননি তাদের আয় কমেছে। বরং সবাই বলেছেন বেড়েছে। তাহলে কীভাবে ২ থেকে অতি দরিদ্র ৫ কোটি হবে? এই কথার কোনো ভিত্তি নেই। ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রেমিট্যান্সে যে ২ শতাংশ ইনসেনটিভ (প্রণোদনা) আছে তা বা বাড়ানো যায় কি না সেটা দেখতে হবে। মেগা প্রকল্পগুলো সার্ভিস করতে পারলে আমরা সমস্যায় পড়বো না। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বলেন, আমি মনে করি বর্তমানে সব থেকে বড় সমস্যা মূল্যস্ফীতি। দেশে গরিব মানুষ এটার চাপে আছে। টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে ৬টি অত্যাবশকীয় পণ্য দেওয়া হয়, এটাও বন্ধ। ৬২ লাখ মানুষকে স্বল্পমূল্যে চাল দেওয়া হচ্ছে। এর আওতা দুই কোটি করা যেতে পারে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পরিধি বাড়াতে হবে। মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে ভোক্তাকে পরিত্রাণ দিতে ভর্তুকি ব্যয় বাড়াতে হবে। গোল টেবিল আলোচনায় অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। যৌথভাবে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিএবির সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন ও ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com