কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ একমাত্র শিশু পুত্র কে হারিয়ে মাতা তুলসী গাইন ও তার স্বামী পুলিন গাইন বিচারের আশায় প্রতিদিন ঘুরছে কয়রা আদলত পাড়ায়। তাদের আশা পুলিশ প্রশাসনের নিকট বিচার না পেলেও আদালতের কাছে তারা পুত্র হত্যার বিচার পাবেন এমন বুকভরা আশা নিয়ে অবশেষে কয়রা সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে মামলা রুজু করেছেন। নিহত শিশু প্রতীম (১১) মাতা ও মামলার বাদী তুলসী গাইন জানান, এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বর থেকে শুরু করে থানা পুরিশের কাছে অভিযোগ করেও বিচার না পেয়ে অবশেষে সন্তানহারা মাতা (আমার) উঠতে হল আদালতে। গড়িয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র প্রতীম গত ১৬ই মে দুপুরে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা যায়। কিন্তু নিহত প্রতীমের গরিব পিতা মাতা এলাকায় বিভিন্ন মহলের কাছে পুত্র হত্যার তদন্ত সহ বিচার চেয়েও না পাওয়ার কারন হিসেবে জানা যায়, হত্যাকারীর আত্মীয়রা অর্থশালী হওয়ায় স্থানীয়ভাবে বিচারের সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে প্রতীম হত্যার মামলাটি এখন আদারতের নির্দেশে তদন্ত করছেন পিবিআই। ঘটনার বিষয়ে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় কয়রা সদর ইউনিয়নের গড়িয়াবড়ী লঞ্চঘাট বাজারে শিফা টেলিকম এর দোকানে গত ১৬ মে শিশু প্রতীম বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। একাধিক সূত্র জানায় শিফা টেলিকম এর মালিক তায়জুল ঢালী দুঃচরিত্রবান এবং দূদান্ত বেপরোয়া ও পরঅর্থালোভী। ঘটনার দিন স্কুল থেকে বাড়ী ফিরে দুপুর অনুঃ ১২ টার দিকে প্রতীম পাশ^বর্তী শিফা টেলিকমে আইসক্রীম কিনতে যায়। এসময় দোকানদার তায়জুল পিছনের রুমে জনৈক মহিলার সাথে গল্প করা অবস্থায় প্রতীমকে ফ্রিজ থেকে আইসক্রীম নিতে বলে। অতঃপর প্রতীম ফ্রিজ খোলার সময় ফ্রিজে সংযোগ দেয়া খোলা বিদ্যুতের তারে হাত লাগাতেই শর্ক করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। ঘটনাটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পথচারীরা জানতে পারায় তায়জুল প্রতীমকে মোটর সাইকেলে তুলে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু বলে ঘোষণা করে। তবে দোকানদার তায়জুলের মামারা অর্থ ও প্রভাবশালী, অন্যদিকে নিহত প্রতীমের মাতা পিতা দরিদ্র হওয়ায় পাশ^বর্তী কয়েকটি গ্রামের কেউ এর প্রতিবাদে এগিয়ে আসে নি বলে পরিচয় গোপন করে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন। এ সম্পার্কে অনেকেই বলেন, তায়জুলের মামারা ইতোমধ্যে বিচারের সব মুখ বন্ধ করে ফেলেছেন। মামলার বাদী তুলসী বেগম জানান, পুত্র হত্যার বিচারের জন্য শতাধিক ব্যক্তির দ্বারে দ্বারে স¦ামীকে নিয়ে ঘুরে বিচার না পেয়ে ৩০ মে থানায় এজহার করি। কিন্তু পুলিশ এজহার গ্রহন না করায় পরদিন ৩১ মে কয়রা সিঃ ম্যাজিঃ আদালতে একমাত্র তায়জুল ঢালীকে আসামী করে মামলা করেছি। অপরদিকে আসামী তায়জুল পলাতক থাকায় তার প্রভাবশালী মামা কারিম মেম্বরের সাথে কথা তিনি শিশু প্রতীম ফ্রিজের বিদ্যুতে জড়িয়ে মরার কথা স্বীকার করে দূর্ঘটনা বলে দাবী করেছেন।