সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন

গুলি করে হত্যা করেছে রোগীদের

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনী আবারও হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। গতকাল গাজার খান ইউনিস এর আল নাসের হাসপাতালে হামলা চালিয়ে এক চিকিৎসাধীন বন্দীকে হত্যা করেছে এ সময় ইসরাইলি বাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলিতে বহু সংখ্যক রোগী মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরা জানায় যে সকল চিকিৎসাধীন রোগীরা সামান্যতম নাড়াচাড়া করতে পারে না তারাও গোলাগুলির শিকার হয়েছে। দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হাসপাতালে হামলা ও ধ্বংস যজ্ঞ চালানোর ঘটনা নতুন নয় তারা ইতিপূর্বে ও একাধিকবার গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়ে শত শত রোগীকে হত্যা করেছে। দখলদার বাহিনীর অন্যতম তার্গেট হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা। কারন তাদের ইচ্ছা ফিলিস্তিনিরা যেন কোন ধরনের চিকিৎসা সেবা না পায় এবং তারা যেন চিকিৎসা হতে বঞ্চিত হয়। উল্লেখ্য গাজার আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল, ফিলিস্তীন তুরস্ক মৈত্রী হাসপাতাল, ক্যানসার হাসপাতাল সহ অন্তত শতাধিক হাসপাতালে ইসরাইলি বাহিনী বিমান হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ইসরাইল বাহিনীর মূল লক্ষ্য গাজাকে ধ্বংস করা এবং ফিলিস্তিনিদের বিশ্ব মানচিত্র হতে নিশ্চিহৃ করা আর এভাবেই তারা অগ্রসর হচ্ছে। দৃশ্যতঃ পুরো গাজা বর্তমান সময়ে ইতিহাসের কঠিন, কঠোর সময় অতিক্রম করছে বলা যায় গাজা তথা ফিলিস্তিনি উপত্যকা বর্তমানে অন্ধকারময় সময় অতিক্রম করছে। গাজার ঘন বসতি অঞ্চল হিসেবে খ্যাত রাফায় গণহত্যা চলছ্।ে পনের লক্ষ জনবসতির এই রাফা বাসি প্রতিদিনই ইসরাইলের বন্দুক, বোমা, বিমানের হত্যার শিকার হচ্ছে। বিশ্ব বাস্তবতায় ইসরাইল কে সমর্থন কারী দেশগুলো কোন ভাবেই রাফা হত্যা কান্ড মেনে নিতে পারছে না। কারণ তাদের নিরবে মৃত্যুকে বেছে নেওয়া ছাড়া কোন পথ নেই। গতকাল অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। পশ্চিমা মিডিয়ার ভাষায় এই বিরল যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে তারা অবিলম্বে রাফা অভিযান বন্ধের আহবান জানিয়েছেন এবং রাফা হত্যাকান্ড হতে নিজেদেরকে কঠোর ভাষায় হুশিয়ারী উচ্চারণ ও সতর্ক করেছে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু উচ্চারন ও সতর্ক করেছে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছে চুড়ান্ত বিজয় না আসা পর্যন্ত রাফা অভিযান চলবে কোন অবস্থাতেই এই অভিযান বন্ধ হবে না। ইসরাইল যে সত্যিকার অর্থে মধ্য প্রাচ্যের কসাইতা তাদের কর্মযজ্ঞ তথা গণহত্যার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রমাণীত হচ্ছে। গণহত্যা প্রতিরোধে জাতিসংঘের বিশেষ উপদেষ্টা অ্যালিম ওয়াইরিমু এনদেরিতু বলেছে গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত থাকলে এই অঞ্চল মানুষ্য বসবাসের সম্পূর্ণ ভাবে অনুপোযুক্ত হয়ে পড়বে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বক্তব্যে বলা হয়েছে হামাস ইচ্ছা করলে সমাঝোতায় আসতে পারে। হামাসের পক্ষ হতে তাদের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছে হামাস কোন অবস্থাতেই অসম্মানজনক চুক্তি করবে না। আমরা মারবো নতুবা মারবো, প্রতিদিনই যুদ্ধ মাঠে হামাস যোদ্ধারা সাফল্য পাচ্ছে। এদিকে পশ্চিম ও দক্ষিন গাজাতেও দখলদার বাহিনীর অভিযান ও গণহত্যা চলছেই। হামাস ইসরাইল যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব বানচাল ও প্রত্যাখান হওয়ার পর আবারও দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দী মুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে আর এবারের আলোচনার স্থান মিশরের কায়রো। গতকাল কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরা জানিয়েছে অবিলম্বে মিশরের রাজধানী কায়রোতে যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে মধ্যস্থকারীরা এবার মধ্যস্থতাকারীদের তালিকায় নতুন সংযোজন হচ্ছে ফিলিপাইন। এদিকে লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের উপর ইসরাইল বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে। গতকাল উক্ত হামলায় শিশু সহ নয় হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে জানাগেছে। উল্লেখ্য হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা গত পাঁচমাস যাবৎ ইসরাইলের অভ্যন্তরে ক্ষেপনাস্ত্র, ড্রোন ও রকেট হামলা চালিয়ে আসছে। একই দিনে ইসরাইলের হামলায় হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এদিকে ইসরাইলি বাহিনী বিমান হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। রাফা হামলার মধ্যে রাফার বৃহত্তম শরনার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। গাজার অন্যতম বৃহত্তম আশ্রয় শিবির আর জাবিলা আশ্রয় শিবিরে প্রতিনিয়ত হামলা পরিচালনা করছে দখলদার বাহিনী। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশন ইতিমধ্যে ঘোষনা দিয়েছে গাজা মৃত্যুকুপে পরিনত হওয়া একটি উপত্যকা, এই উপত্যকার অন্তত সত্তরভাগ ঘরবাড়ী ধ্বংস হয়েছে। আশি ভাগ ফিলিস্তিনিরা বাস্তচ্যুত হয়েছে তাদের থাকার খাওয়ার পথ নেই। প্রতিদিনই গাজায় ক্ষুধার্থ ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরাইলকে হুশিয়ারী করে বলেছে দখলদার ইসরাইল আন্তর্জাতিক মাইনের তোয়াক্কা না করে অবিরাম গাজায় হামলা সহ লুটপাট করছে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে ইসরাইলের আগ্রাসন ও গণহত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের আহবান জানান। দখলদার ইসরাইল প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা ও হত্যাকান্ড পরিচালনা করলেও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী চরম বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে গাজায় তারা প্রতিমুহুর্তে হামাসের হামলা আতঙ্কে এবং হামাস কর্তৃক ক্ষয়ক্ষতির শিকারে পরিনত হচ্ছে। ইসরাইলি বাহিনী গতকাল পশ্চিম তীরে একাধিক বার হামলার মুখে পড়েছে। হুতি যোদ্ধাদের লোহিত ও ভূ-মধ্য সাগরে হামলা চলছেই। গতকালও একাধিক বার হামলা চালিয়েছে তারা। ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিব সহ প্রধান প্রধান শহরগুলোতে গতকালও সাধারন ইসরাইলিরা বিক্ষোভ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com