শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
গাঁজাসহ মহিলা আটক পাইকগাছায় তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ পাখির জন্য খোলা পাত্রে পানির ব্যবস্থা মশিউর রহমান চেয়ারম্যান হলে সদরের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে সখিপুর পারুলিয়ার ব্যবসায়ীদের প্রিয় জালাল উদ্দীনের ইন্তেকাল জেলা গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ আশরাফ হোসেন আর নেই সাতক্ষীরায় মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত পিতা পুত্রের দাফন সম্পন্ন আজ সাতক্ষীরায় আসছেন জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা গাজার মাটিতে যোদ্ধাদের সাথে প্রকাশে হামাস নেতা রেকর্ড ভাঙ্গা তাপদাহে পুড়ছে দেশ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইংরেজদের বিরুদ্ধে কবিতার মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন নজরুল সম্মিলনে সাবেক সিনিয়র সচিব -মো: আব্দুস সামাদ

বেড়েই চলেছে চিকিৎসা ব্যয় ঃ নিঃস্ব হচ্ছে রোগী ও রোগী স্বজনরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষ বর্তমান সময়ে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতির শিখরে, এক কথায় বলা যায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেক অনেক উচ্চতায় পৌছেছে। জঠিল থেকে জটিলতার এমনকি মহামারী দুরারোগ্য ব্যধি চিকিৎসাও দেশে সম্ভব। কিন্তু বাস্তবতা হলো চিকিৎসা ব্যয় ব্যবস্থাপনা সম্প্রতিক বছর গুলোতে অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়েই চলেছে। যে কারনে জনমনে তথা রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনের মাঝে বার বার উচ্চারিত হচ্ছে টাকা আছে যার উন্নত চিকিৎসা তার। চিকিৎসা পাওয়া এবং গ্রহন করা অন্যতম মৌলিক অধিকার কিন্তু সেটা কাজির গোয়ালে নয় কেতাবে আছে প্রানি অর্থাৎ সবার জন্য চিকিৎসা কেবল কাগজে সীমাবদ্ধ, বাস্তবতা হলো কঠিন, কঠোর, বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়া ঠান্ডা জ্বর ও মৌসুমী রোগ বলেই হতে শুরু করে, জটিল রোগ ব্যাধি সেই সাথে রোগী যাতায়াত খরচ, এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া, চিকিৎসক ফি, ঔষধের অতিরিক্ত মূল্য অপারেশন, প্যাথলজি পরীক্ষা সব কিছুই উর্ধমুখি। সাধারনত মানুষের আয় এবং জীবন যাত্রার ব্যয়ের সাথে চিকিৎসা খরচ মিলাতে পাচ্ছে না যে কারনে দরিদ্র হতে হত দরিদ্র লোকগুলো উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে না, যে কারনে ডাক্তারের কাছে যেতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে এবং সরকারি হাসপাতালই তাদের শেষ ভরসা, আর এখানেও দালালদের দৌরাত্ব, চিকিৎসকদের কেউ কউ রোগী প্রতি আন্তরিকতা হওয়া অপেক্ষা ঔষধ কোম্পানীর পছন্দ অনুযায়ী ঔষধ লিখে ও ক্ষেত্র বিশেষ অপ্রয়োজনীয় প্যাথলজি টেস্ট দিয়ে প্রকারান্তে অসহায় রোগীর সাথে প্রতারনা করছে। হত দরিদ্ররাই কেবল বেকায়দায় তা নয় মধ্যবিত্তদের জন্য উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার সক্ষমতা সংকুচিত হচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে ততোই চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ছয় মাসে জীবন রক্ষাকারী ঔষধের পাশাপাশি সচারচার সাধারণ রোগে ব্যবহৃত ঔষধের লাগামহীন মুল্য বেড়েই চলেছে। দেশের বাজার ব্যবস্থার সাথে চিকিৎসা ব্যবস্থা সমন্বয় করার অনৈতিক চেষ্টা করছে একশ্রেনির প্রাইভেট হাসপাতালও ক্লিনিকগুলো, প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোর অধিকাংশই ব্যবসায়িক দিক দিয়ে পরিচালিত হওয়ায় ইচ্ছামত চিকিৎসক ফি, বেডভাড়া, ডাক্তার রাউন্ড, প্যাথলজি টেষ্ট, সব কিছুই মাত্রারিক্ত মূল্য নির্ধারন করা হয়। ঔষধ কোম্পানী গুলোতে তাদের কোম্পানীর ঔষধ ব্যবস্থাপত্রে লেখানোর অনৈতিক প্রচেষ্টার সাথে এক শ্রেনির চিকিৎসক যুক্ত যে কারনে সঙ্গত কারনে বেশী বেশী ঔষধ লেখার প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, প্রতিযোগিতামূলক ঔষদ ব্যবস্থা কোম্পানী গুলোর অনেকে চিকিৎসকদের কমিশন, উপহার সামগ্রী প্রদান, বিদেশ ভ্রমন, এমনকি ফ−াট বাড়ী ও প্রদান করা হয়। ঔষধ বিক্রির জন্য চিকিৎসক ও ঔষধ বিক্রেতাদের পিছনে কোম্পানীর খরচ গুলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত বা শেষ হিসেবে হত দরিদ্র বা চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পকেট হতেই আসে। প্যাথলজি টেস্টে রোগীর অনেক বেশী খরচ হয় বাস্তবতা হলো এক শ্রেনির প্রাইভেট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন কোন চিকিৎসকদের দিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশী টেস্ট লেখানোর অলিখিত নির্দেশনা দিয়ে থাকেন আবার এটাও সত্য যে বর্তমান সময়ে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান রোগ নির্নয়ের ক্ষেত্রে যে সকল পরীক্ষা নিরিক্ষার ব্যবস্থা দেখিয়েছে তা অত্যন্ত ব্যয় বহুল। রোগী সাধারণ, চিকিৎসক সহ চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে সংশি−ষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে কোন কোন রোগ বিশেষ করে অসংক্রামক রোগ গুলোর বেশীর ভাগ সারা বছর চিকিৎসা করতে হয় যা নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব কিন্তু পুরোপুরী উপশম হয় নায় যার মধ্যে এ্যাজমা, এ্যালাজি, ডায়াবেটিকস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, প্যারালাইসিস, দীর্ঘ মেয়াদী হাড়ভাঙ্গা, মাথা ব্যথা, মাইগ্রেন, মহিলাদের মহিলা বিষয়ক নানান রোগ, ক্যানসার এ সকল রোগের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হয় যে কারনে ব্যয় বাড়তে থাকে। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় খরচের এই মাহাউৎসব দরিদ্র মানুষের জন্য অভিশাপ, তবে সরকারি হাসপাতাল গুলোতে অবশ্যই কম খরচে মান সম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা বিদ্যমান, তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে সরকারি হাসপাতাল গুলোর কোন কোনটি দালালের উৎপাত থাকলেও বিনামূল্যে বা নাম মাত্র খরচে অপারেশন কাজ পরিচালনা হয়, এক্ষেত্রে বাইরে থেকে কিছু সরঞ্জাম ও ঔষদ ক্রয় করতে হয়, ঔষধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। সরকারি হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা সরকারি ভাবেই নির্ধারিত এক্ষেত্রে সংশি−ষ্ট হাসপাতাল ব্যবস্থাপনাও পরিচালনা পর্ষদকে আন্তরিক হতে হবে। সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা ফ্রি অথবা কমমূল্যে হওয়ায় অধিকাংশ রোগীরা সরকারি হাসপাতাল মুখি হয় যে কারনে অধিক সংখ্যক রোগীর উপস্থিতি ঘটায় সেবা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা সকলের কপালে জোটে না, অন্যদিকে ডাক্তার ও বেড স্বল্পতা, বকশিস প্রদান ট্রলি বানিজ্য, বেডপেতে দালালের পিছে ছোটাছুটি, অতিরিক্ত অর্থব্যয় সব মিলে সরকারি সেবা ফ্রি হলেও পদে পদে খরচ করতে করতে রোগী জন্য তা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। সফস্বল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল গুলোতে মারাত্মক অসুস্থ রোগীরা আগমন ঘটলে মুহুর্তের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে বা রাজধানী ঢাকায় হস্তান্তর করা হয়। বিশেষ করে মফস্বলের হাসপাতাল গুলোতে এই সংস্কৃতি ব্যাপক ভাবে প্রচলিত। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় জেলা বাসির আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটার কথা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, দেশসেরা এই হাসপাতালে চিকিৎসক ঘাটতি এবং অত্যাধুনিক পরীক্ষা নিরিক্ষার ব্যবস্থাপনা গুলোর কোন কোনটি হচ্ছে না। অবশ্য চিকিৎসকদের আন্তরিকতা নিয়ে খুব বেশী প্রশ্ননেই। সদর হাসপাতাল জেলা বাসির চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তবে এখানেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সহ নার্সদের ঘাটতি বিদ্যমান, শেষ কথা দরিদ্র মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল সরকারী হাসপাতাল বিধায় রোগীরা যেন বিভাগে বা রাজধানীতে না ছোটে সে জন্য জেলা সদরের হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স সহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ সেই সাথে বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা জরুরী।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com